৮ আগস্ট, ২০১২

মুভি রিভিউঃ দ্য হাঙ্গার গেমস (যত গর্জে তত বর্ষে না)

আপনি যদি এই ব্লগের নতুন পাঠক হন আর পরবর্তী সকল নতুন পোস্ট দ্রুত পেতে চান
তাহলে সাবস্ক্রাইব করুন RSS Feed !
দীর্ঘদিন যাবত নানা কিসিমের হলিউডি মুভি দেখে দেখে প্রায় নেশার মত হয়ে গিয়েছে। নতুন কোন মুভি রিলিজ হলে সেটা না দেখা পর্যন্ত শান্তি পাইনা, বিশেষ করে সেটি যদি হয় আলোচিত-সমালোচিত কোন মুভি। পেশায় ছাত্র, ফলে গাঁটের পয়সা খরচ করে ঢাকার বসুন্ধরা সিনেপ্লেক্সে গিয়ে মুভি দেখা পোষায় না (হলিউডি মুভিগুলো এখানে ছাড়া আর কোন সিনেমা হলে দেখায় কিনা জানিও না), ফলে বাসার বাংলালায়ন ইন্টারনেট সংযোগটাই আমার ভরসা! ইন্টারনেট থেকে মুভি ডাউনলোড করি (যেটিকে আবার অনেকে নাক ছিঁটকে বলেন 'পাইরেসি') আর ল্যাপিতে বসে দেখি।
এরকমই একটি আলোচিত-সমালোচিত হলিউডি মুভি নিয়েই আমার আজকের রিভিউ, শিরোনামে দেখতে পাচ্ছেন মুভির নাম 'দ্য হাঙ্গার গেমস', যার বাংলা করলে দাঁড়ায়- ক্ষুধার্ত ক্রীড়া বা  এধরনের কিছু একটা। কিন্তু আমার মতে এই মুভির সঠিক নাম হওয়া উচিত ছিলো 'যত গর্জে তত বর্ষে না'। একথা কেন বলছি?
এর কারন এই মুভি রিলিজের আগে ও পরে ইন্টারনেটে এটি নিয়ে বিস্তর সমালোচনা-আলোচনা দেখেছি, ব্লগ-ফোরাম-ফেসবুক-টুইটার থেকে শুরু করে সবখানে এই মুভির ভক্তগোষ্ঠীদের (বিশেষত নারী সমাজ) অতি-উৎসাহ নিশ্চয় অনেকেরই চোখে পড়েছে। এই মুভিটি হেন, এই মুভিট তেন, এই মুভিটি নারীবাদী মুভি ইত্যাদি ইত্যাদি নানা আলোচনা দেখে নিজেই ভাবছিলাম কি আছে এই মুভিতে? এটাতো অবশ্যই দেখা দরকার।

যাইহোক, এটি রিলিজ হয় গত ২৩শে মার্চ। রিলিজের পর থেকে এখনো পর্যন্ত এই মুভিটি মোট ৬৮ কোটি ডলারের চেয়ে বেশি ব্যবসা করেছে (এটির নির্মান ব্যয় ছিলো ৭৮ মিলিয়ন ডলার)। টানা ৪ সপ্তাহ আমেরিকান টপচার্টের শীর্ষে থেকে এই মুভিটি নতুন রেকর্ড ও করেছে। এটা তো গেলো মুভিটির আর্থিক সাফল্যের খতিয়ান, কিন্তু একজন সাধারন মুভিপ্রেমী দর্শকের দৃষ্টিকোন থেকে বিচার করলে এই মুভিটি কেমন? সেই দৃষ্টিকোন থেকেই আমার এই রিভিউ। আসুন প্রথমে দেখি এই মুভিটির কাহিনী-


দ্য হাঙ্গার গেমস মুভির পোস্টার

কাহিনী সংক্ষেপ
সায়েন্স ফিকশান ধর্মী কিশোর এডভেঞ্চারধারার এই মুভিতে দেখা গেছে ভবিষ্যতের পৃথিবীর একটি দেশ পানেম। যেখানে ১৩ টি অঞ্চল (ডিস্ট্রিক্ট) ছিলো যারা পানেমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলো, যুদ্ধে পরাজয়ের পর ১৩নং ডিস্ট্রিক্টটি বিলুপ্ত করে দেওয়া হয় এবং বাকি ১২টি ডিস্ট্রিক্টের মানুষ প্রতিনিয়ত জীবন সংগ্রামেরত। এদের খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থানের চাহিদা পানেমের শাসকদের দয়ার (রেশন) উপর নির্ভর। শাসকেরা বিলাসবহুল জীবনযাপনে অভ্যস্ত আর ডিস্ট্রিক্টের মানুষ দিনমজুর দরিদ্র শ্রেনীর...অর্থাৎ যা বোঝা গেলো ভবিষ্যতেও পৃথিবী শাসক ও শোষিত দুইভাগে বিভক্ত থাকবে, টিপিক্যাল পুঁজিবাদি চিন্তাধারা!
এখন অতীতের দোষ (বিদ্রোহ) মনে করিয়ে দিতে প্রতিবছর হাঙ্গার গেমস নামে একটি গেমের আয়োজন করে পানেমের শাসকেরা যেখানে প্রতি ডিস্ট্রিক্ট থেকে ২ জন করে মোট ২৪ জন কিশোর-কিশোরী অংশ নেয় ও উন্মুক্ত এরিনায় একে অন্যকে হত্যা করার খেলায় মেতে উঠে, যা টিভিতে উপভোগ করে পানেমের ধনী দর্শকেরা। লড়াই শেষে মাত্র একজন বেঁচে থাকে ও বিনিময়ে তার ডিস্ট্রিক্ট পায় খাদ্য ও জীবনযাপনের উপকরণ। কি পাঠক? চমকে উঠলেন? হাঁ, ঠিকই ধরেছেন, মুভির এই থিম নতুন কিছু নয়, হলিউডে এধরনের উন্মুক্ত এরিয়ান হত্যার খেলা নিয়ে এর আগেও বহু মুভি তৈরি হয়েছে ও এখনো হচ্ছে, তাই এই মুভিটিকেও সেই কাতারের একটি মুভি হিসাবেই ধরা যায়। অর্থাৎ নতুন বোতলে সেই পুরানো মদই দর্শকদের গেলানো হয়েছে।
তো আমাদের মুভিটির প্রধান চরিত্র কিশোরী ক্যাটনিস (জেনিফার লরেন্স) [X Men First Class মুভিতেও একে দেখা গিয়েছে], যে তার বোনের বদলে ভলান্টিয়ার হিসাবে হাঙ্গার গেমসে অংশ নেয়, তার সাথে থাকে একই ডিস্ট্রিক্টের কিশোর পিটা (জশ হাচারসন) [Journey 2 Mysterious Island এর প্রধান চরিত্রে ছিলো]। তারা কিভাবে পানেমে যায়, সেখানে তাদের অভিজ্ঞতা এবং সর্বোপরি অন্যান্য ডিস্ট্রিক্টের সবাইকে হারিয়ে কিভাবে তারা বেঁচে থাকে ও হাঙ্গার গেমসে জিতে বাড়ি ফেরে সেটা নিয়ে বাকি মুভির কাহিনী আবর্তিত হয়েছে। এটা আমি আর বিস্তারিত লিখছিনা, যাদের আগ্রহ আছে তারা মুভিটি দেখলেই বুঝে যাবেন।

এই মুভিটি নিয়ে যতটা আলোচনা হয়েছিলো ততটা উপভোগ্য কেন হতে পারেনি এবার সেটা নিয়ে লিখছি। সেই আলোচনায় যাওয়ার আগে মুভির কিছু ভালো দিক নিয়ে তো লিখতেই হবে, যেমন- মুভিতে ধনী-গরীবের যে বৈষম্য দেখানো হয়েছে তা কিছুটা হলেও বাস্তব লেগেছে, বিশেষ করে যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে মানুষের মানবেতর জীবনযাপনের এই চিত্র আমরা যুগে যুগে দেখেছি। যুদ্ধের পর কিছু মানুষের আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়া ও কিছু মানুষের দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হওয়ার এই রীতি চিরন্তন।
মুভিটির গ্রাফিক্স ও শব্দশৈলী মানসম্পন্ন, তবে গ্রাফিক্স অন্যান্য হলিউডি মুভির তুলনায় ততটা বেশি নয়, মানে কাহিনীর প্রয়োজনে যতটুকু দরকার ততটুকুই দেখানো হয়েছে। পানেমের প্রেসিডেন্ট স্নো চরিত্রে বর্ষীয়ান অভিনেতা ডোনাল্ড সাটারল্যান্ডকে ভালোই মানিয়ে গেছে, ডিস্ট্রিক্ট ১২ এর মাতাল অথচ যত্নশীল মেন্টর হেইমিচ চরিত্রে অভিনেতা উডি হ্যারেলসনকেও খারাপ লাগেনি, যদিও এই চরিত্রটি আরেকটু বড় হতে পারতো। সেই তুলনায় বলতে গেলে মুভির প্রধান অনেক চরিত্রের চেয়ে এদের অভিনয় অনেকটাই সন্তোষজনক ছিলো।
পারিবারিক বন্ধন ও বোনের প্রতি বোনের যে টান এই মুভিতে দেখানো হয়েছে সেটাও অনেকটা দর্শকদের আকর্ষন করেছে। ধনী শ্রেনীর চেয়ে দরিদ্র বা মধ্যবিত্ত পরিবারে পারিবারিক ভালোবাসা যে মজবুত সেটাই এই মুভিতে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। আর গতানুগতিক হলিউডি মুভির বাইরে অনেকদিন পর একটি সাই-ফাই মুভি দেখলাম যেটির প্রধান চরিত্র একজন নারী (বেশিরভাগ সাই-ফাই মুভিতেই নায়ক থাকে একাই-একশ এবং নায়িকা আই-ক্যান্ডি)। ফলে এই মুভিটিকে অনেকে নারীবাদী মুভি হিসাবেও চিহ্নিত করেছেন।

মুভিটির প্রধান চরিত্র ক্যাটনিস (জেনিফার লরেন্স)

 এবার মুভিটির প্রধান চরিত্র মানে ক্যাটনিসকে নিয়ে কিছু বলি, নতুন এই অভিনেত্রী জেনিফার লরেন্স বয়সের তুলনায় এখনো অভিনয়ে অনেকটাই কাঁচা, বিশেষ করে সংলাপ উচ্চারণ এবং ফেসিয়াল এক্সপ্রেশনের দিক থেকে কিছুটা অনভিজ্ঞ মনে হলো। একশান দৃশ্যেও অপটু মনে হয়েছে এই অভিনেত্রীকে, বিশেষত যেহেতু এই চরিত্রটি মুভির প্রধান চরিত্র, তাই আরো কিছুটা অভিজ্ঞ কাউকে এই চরিত্রে কাস্টিং করলে চরিত্রটিকে যথাযথভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারতো বলে মনে করি। কিছু দৃশ্যে তার রোবটিক সংলাপ দেখে দর্শক বিরক্ত হতে পারেন, আর ক্যাটনিস চরিত্রটি ১৬ বছরের এক কিশোরীর হলে জেনিফার লরেন্সকে পর্দায় ষোড়শী মনে হয়নি! বরং মনে হয়েছে একজন পরিপূর্ণ যুবতী [আসলেই জেনিফার লরেন্সের বয়স ২১ বছর]।
এবার আসি পিটা চরিত্রে, জশ হাচারসন মূলত শিশুশিল্পী থেকে হঠাৎ কয়েকটি মুভিতে মূল চরিত্রে অভিনয় করে জাতে উঠে গেছে, কিন্তু অভিনয়ের যে ক্যারিশমা সেটি এখনো সে দেখাতে পারেনি। মুভির প্রথমদিকে তাকে দেখে মনে হয়েছে হঠাৎ গ্রাম থেকে শহরে আসা কোন বালক, এরপর যতই মুভি গড়িয়েছে ততই ক্যাটনিসের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক প্রকাশ ও এর অভিব্যক্তি নিয়ে কাহিনী গড়িয়েছে, রোমান্স দৃশ্যগুলোতে হাচারসনের আড়ষ্টতা এখনো কাটেনি। বেচারা ছেলেমানুষ! হঠাৎ মুভিতে কিস সিন করতে হচ্ছে, যা তার জন্য বিব্রতকর কিনা বুঝতে পারছিনা ;) তবে এটা ঠিক টিনএজ চরিত্রে জশ হাচারসনকেই বরং কিছুটা মানিয়েছে কারন বাস্তব জীবনেও এই অভিনেতা এখনো টিনএজ (বয়স ১৯)। ফলে নিজের চেয়ে বয়সে প্রায় ২ বছরের বড় এক অভিনেত্রীর সাথে টিনএজ প্রেমের প্রকাশ ঘটানো কিছুটা কষ্টকরই বটে। এই চরিত্রটি মুভিতে ২য় প্রধান চরিত্র হলেও সেই তুলনায় এই চরিত্রটি নজর কাড়তে পারেনি। পুরো মুভিতে এই চরিত্রের গুরুত্ব স্রেফ কিছু রোমান্স দৃশ্য, স্পন্সরদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য টিভি সাক্ষাৎকারে প্রেমের কথা বলা আর হালকা কিছু একশান সিকোয়েন্সের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো।

পিটা চরিত্রে জশ হাচারসন

মুভিতে আরেক গ্রাম্য বালক ও ক্যাটনিসের সম্ভাব্য প্রথম প্রেমিক গেইল হথর্ণ চরিত্রে অল্পকিছু দৃশ্যে থর মুভিখ্যাত অভিনেতা ক্রিস হেমসওয়ার্থের ভাই ও মার্কিন কান্ট্রি গায়িকা টেলর সুইফটের সাবেক বয়ফ্রেন্ড লিয়াম হেমসওয়ার্থকে দেখা গেছে। এই চরিত্রটি মুভিতে রাখার কি দরকার ছিলো সেটা বুঝে উঠিনি, এছাড়া এমন স্বল্পসময়ের পর্দা উপস্থিতি দিয়ে লিয়াম হেমসওয়ার্থ দর্শকদের কতটুকু নজরে পড়লেন সেটাও প্রশ্নসাপেক্ষ।
অন্যান্য ডিস্ট্রিক্টের প্রতিযোগী চরিত্রে যারা অভিনয় করেছেন এদের মধ্যে অনেকে ছিলেন বেশি বয়স্ক আবার অনেকে একেবারেই বাচ্চা! যাইহোক, এদের অভিনয় নিয়ে কিছু বলার প্রয়োজন নেই, এদের মধ্যে কয়েকজনের অভিনয় দেখে মনে হয়েছে এরা এখনো হাইস্কুল পড়ুয়া কোন ইঁচড়েপাকা বালক-বালিকা যারা অন্যান্য সহপাঠীদের উত্ত্যক্ত করেই মজা পায়। এমনকি গেমসের এরিনাতেও এদের আচরণ স্কুলপড়ুয়া ছেলেমেয়েদের মতই মনে হয়েছে, এধরনের অভিনয় কোন টিনএজ মুভিতে (যেটা কোন স্কুলকে কেন্দ্র করে তৈরি) মানিয়ে গেলেও এই মুভিতে কেন যেন মানানসই মনে হয়নি।
মুভির আরেকটি দৃষ্টিকটু দিক হলো, পানেমের অধিবাসীদের উদ্ভট সাজসজ্জা ও জীবনযাপন। ধনীশ্রেনীর প্রতিভূ হিসাবে এদের মুভিতে তুলে ধরা হয়েছে, কিন্তু তাই বলে এধরনের উদ্ভট সাজপোশাকের আদৌ কোন দরকার ছিলো বলে আমি মনে করিনা। এদের দেখে যতটা না ভবিষ্যতের আধুনিক শহরবাসী মনে হয়েছে তারচেয়ে বেশি কোন সার্কাসের ক্লাউন বলেই মনে হয়েছে।
অন্যদিকে গ্রামবাসীদের (ডিস্ট্রিক্ট) পোশাক ও জীবনযাপন দেখে মনে হয়েছে ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার কোন গ্রামের চিত্র! কিছু ডিস্ট্রিক্টের পুরুষদের পোশাক তো আবার আমেরিকার কারাগারগুলোর কয়েদীদের পোশাকের সাথেও মানিয়ে গেছে। অর্থাৎ ভবিষ্যতের পৃথিবীর চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে পোশাক পরিকল্পনা হাস্যকর করে ফেলা হয়েছে এই মুভিতে।
ভবিষ্যতের পুলিশ বাহিনী বা সাদা পোশাকের পিস কীপারদের আসলেই পিস কীপার বলতে হবে! মুভির একপর্যায়ে ডিস্ট্রিক্ট ১১ তে দাঙ্গা শুরু হলে এরা স্রেফ লাঠি হাতেই সেটা দমন করেছে আর জলকামান ব্যবহার করেছে। তারমানে ভবিষ্যতে আমাদের দেশের পুলিশের মত টিয়ারগ্যাস আর ধুমধাম রাবার বুলেটের ব্যবহার হবেনা বলে ধারনা পেলাম, এখন যারা পুলিশের টিয়ারগ্যাস আর রাবার বুলেটের ভয়ে রাজপথে শক্ত আন্দোলন করতে পারেনা তারা ভবিষ্যতের এই চিত্র দেখে উৎসাহী হতে পারে।
 আর ভবিষ্যতের কম্পিউটার কেমন হবে সেটার কিছুটা ধারনা পেলাম এই মুভির গেমস কন্ট্রোল সেন্টারের অবস্থা দেখে, সেরকম সব কম্পিউটার, মনিটর-সুইচ সবই টাচ এবং সাদা! মানে অন্য কোন কালারের বালাই নেই, ডিসপ্লে থেকে শুরু করে সবই পিউর সাদা (সাদা শান্তির প্রতীক, ফলে হাসার কোন অর্থ নেই)। যদিও এধরনের কম্পিউটার আজকাল কিছু হলিউডি মুভিতে হরহামেশাই দেখা যাচ্ছে (আয়রনম্যান দ্রষ্টব্য)। তবে এটা দেখে শান্তি পেলাম যে অন্তত ভবিষ্যতে কেউ এপলের ম্যাক কম্পিউটার নিয়ে বসে নাই [হলিউডি মুভিতে আবার কম্পিউটার মানেই ম্যাকবুক, মোবাইল মানেই আইফোন]। যদিও এই অল-হোয়াইট কম্পিউটারগুলা কোন ওএসে চলছে সেটা ধরতে পারিনি।

এছাড়াও এই মুভিটি ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কিছু কারনে সমালোচিত হয়েছে। সবমিলিয়ে যতটা উৎসাহ আমরা এই মুভি নিয়ে ইন্টারনেটে দেখেছিলাম, দেখার পর মনে হয়েছে সেটা কিছুটা বাড়াবাড়ি ছিলো। গতানুগতিক হলিউডি মুভির চেয়ে খুব বেশি ভিন্ন কিছু এই মুভিতে দেখতে পাইনি। কাহিনীতে কিছুটা ভিন্নতা আনার চেষ্টা করা হলেও দূর্বল অভিনয় ও কিছু অব্যবস্থাপনার কারনে সেটা হাস্যকর ঠেকেছে। এই মুভি নারীবাদী সমাজ পছন্দ করলেও সাধারন দর্শকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হবে বলেই ধারনা করছি।
আমি ব্যক্তিগতভাবে রেটিং দিতে হলে এই মুভিকে দিবো ১০ এর মধ্যে ৬.৭ (যদিও এটির IMDb রেটিং ৭.৫ এর মত)। কিন্তু আমি মনে করি একজন সাধারন দর্শকের দৃষ্টিকোন থেকে ততটা বেশি আকর্ষন করতে এই মুভিটি ব্যর্থ হয়েছে। টাইম পাস সাই-ফাই মুভি হিসাবে এটি দেখা যায়, কিন্তু সিরিয়াস কোন মুভি বা জীবনের গভীর কোন বক্তব্যপ্রধান মুভি হিসাবে এটিকে ভাবলে ভুলই করা হবে। সর্বোপরি এই মুভির মাধ্যমে পরিষ্কার কোন বক্তব্য আমরা পাইনি। হলিউডি চিন্তাচেতনায় নির্মিত আরেকটি সাই-ফাই মুভির চেয়ে বেশিকিছু তাই এটিকে ভাবতে পারছিনা।

পরিশেষে বলতে চাই, এই মুভিটি নিয়ে প্রাক-আলোচনা ও উৎসাহ এবং আমি নিজে দেখার পর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার মধ্যে অনেক ফারাক। তাই আবারো বলতে চাই, 'যত গর্জে তত বর্ষে না'।



2 মন্তব্য:

মাসুমা বলেছেন...

অনেক ভালো লেগেছে আপনার কথাগুলো।আমি ইনটারনেটে "দ্য মেজ রানার"এর মতো সাই-ফাই খুজছিলাম,হঠাত এই মুভিটা সামনে আসে।তারপর ডাউনলোড দিলাম।দেখলাম মুভিটা পুরাই অন্ধকার।আপনার সাথে আমি ১০০% একমত।সবাই বলতেছে(আজকে শুনলাম)এই মুভিটা সুপার গুড।আমি তো চিন্তায় পড়ে গেছিলাম।আচ্ছা,এই মুভিটা এমন অন্ধকার টাইপের কেন,ভাইয়া?সিনেমাটোগ্রাফি ভাল না নাকি.......?দয়া করে জানাবেন।চিন্তায় পড়ার।পর,ইন্টারনেটে'দ্য হাঙ্গার গেমস'লিখে সার্চ দিলাম,ফার্স্ট এই আপনার লেখা পেয়ে এত খুশি হইছি।আচ্ছা আপনার কী "দ্য মেজ রানার এর মতো সাই -ফাই লাইক করেন?

মাসুমা বলেছেন...
এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।
মন্তব্যে ইমোটিকন ব্যবহারের জন্য ইমোটিকনের পাশের কোডটি আপনার কি-বোর্ডের সাহায্যে টাইপ করুনঃ
:)) ;)) ;;) :D ;) :p :(( :) :( :X =(( :-o :-/ :-* :| 8-} :)] ~x( :-t b-( :-L x( =))

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন